মুহাম্মদ আবু হেলাল, ঝিনাইগাতী প্রতিনিধি : শেরপুরের শ্রীবরদীতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য বরাদ্দ দেওয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৭ বস্তা সরকারী বই পাচারকালে উদ্ধার করেছে শ্রীবরদী থানা পুলিশ। বুধবার রাতে উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া নয়াবাজার এলাকা থেকে ওইসব বই উদ্ধার করা হয়।
এসময় একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক জব্দ ও ইজিবাইকের চালক রুবেল মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। আটক রুবেল ঝিনাইগাতী উপজেলার লয়খা গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জব্দকৃত বইগুলো ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের। এবিষয়ে ৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা কোহিনুর ফারজানাসহ ৫ জনকে আসামি করে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২১ শিক্ষাবর্ষের সরকারি বই বিক্রি হচ্ছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাত ১১টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলা ঘোনাপাড়া নয়াবাজার এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় একটি ইজিবাইকে করে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় ১৭ বস্তা মাধ্যমিকের সরকারি বই জব্দ করা হয়, যা ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ২০২১ ইং সালের পাঠ্যের। পরে ওই বইগুলো সহ ইজিবাইক ও চালক রুবেল মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা কোহিনুর ফারজানার দাবি করেন, সামনেই স্কুল খুলছে। এজন্য দপ্তরি আব্দুর রউফকে বিদ্যালয় পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি পুরাতন খাতাগুলো বিক্রি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে তাকে না জানিয়েই পুরাতন খাতার পাশাপাশি কিছু বইও বিক্রি করে দিয়েছে। তিনি দাবি করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে স্থানীয় একটি মহল ওই ঘটনায় তাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করছে। ঘটনার বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আলম জানান, ঘটনাটি শোনার পর বৃহস্পতিবার সকালে ওই প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এজন্য প্রধান শিক্ষিকাকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে এবং তদন্তে ঘটনার প্রমাণ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হাশেম জানান, ওই ঘটনায় ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা কোহিনুর ফারজানাসহ ৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে এবং একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অন্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।